প্রধান মেনু

বঙ্গোপসাগরে আবারও বেড়েছে জলদস্যুদের তৎপরতা

আলোরকোল ডেস্ক।।

বঙ্গোপসাগরে আবারও বেড়েছে জলদস্যুদের তৎপরতা। সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে তাদের হামলার শিকার হয়েছেন জেলেরা। বরগুনার পাথরঘাটা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় একদিনে পাঁচটি ট্রলারে হামলা চালিয়েছে দস্যুরা। এ সময় তাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন একজন।

জানা যায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে এফবি আনোয়ার, এফবি মায়ের দোয়া ও এফবি রৌদ্রসহ পাঁচটি ট্রলারে হামলা চালিয়ে মাছ, তেল ও সামগ্রী লুটে নেয় জলদস্যুরা। এর মধ্যে এফবি রৌদ্র নামে ট্রলারের ১৪ জেলেকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। ওই দিন রাত ৯টার দিকে একই এলাকায় এফবি বাবুল ট্রলারে হামলা চালায় জলদস্যুরা। ট্রলারে থাকা মাছ, তেলসহ মালামাল লুটে নেন। এ সময় মুসা নামে এক জেলে বাধা দিলে ডাকাত দল তাকে গুলি করে। মুহূর্তেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মুসা।

হঠাৎ জলদস্যুদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় উপকূলের জেলেদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেক জেলে ভয়ে, আতঙ্কে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছেন না। সাগরে যারা ছিলেন তারাও ঘাটে ফিরছেন। সাগরে জলদস্যুতা বন্ধে সরকার কঠোর থাকায় বিগত দুবছর জলদস্যু আতঙ্ক ছিল না। হঠাৎ করে আবারও জলদস্যুদের তৎপরতা বেড়েছে।

এফবি রৌদ্র ট্রলারের মাঝি মো. বাদল মোল্লা জানান, সুন্দরবনসংলগ্ন মান্দারবাড়িয়া এলাকায় মাছ ধরার জন্য জাল ফেলে অপেক্ষা করছিলেন তারা। গত মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে আটজনের একটি সশস্ত্র জলদস্যু দল ট্রলারে উঠে সবাইকে বেঁধে মাছ, তেল, ব্যাটারিসহ

প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়। এ সময় ১৪ জেলেকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। ডাকাতি শেষে ট্রলারের জাল কেটে দিয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য ট্রলারে ডাকাতি করতে যায়। ঘটনার পর আমরা পাথরঘাটার পদ্মা এলাকার খলিল মাঝির ট্রলার থেকে তেল নিয়ে দ্রুত পাথরঘাটায় ঘাটে চলে আসি। পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপেলেক্সে চিকিৎসা নিই। তিনি আরও জানান, জলদস্যুদের মধ্যে তিনজনের হাতে পিস্তল ও একজনের হাতে বন্দুক দেখা যায়।

পাথরঘাটা উপজেলা স¦াস্থ্য কমপেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. রাফিউল হাসান বলেন, হাসপাতালে আসা ১৪ জনের শরীরে আঘাত রয়েছে। এর মধ্যে রুহুল আমিন নামে একজনের বাম হাত ভেঙে গেছে। সবাইকেই ভর্তি নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্রলার মালিক ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বঙ্গোপসাগরে জলদস্যুদের অত্যাচার আবার শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহে প্রায় ৫টি ট্রলারে ডাকাতি হয়েছে। মালামাল লুটে বাঁধা দেওয়ায় এক জেলেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আতঙ্কে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছেন না উপকূলের জেলেরা। জেলেদের নিরাপত্তার জন্য সাগরে কোস্টগার্ড, নৌবাহিনীর ও উপকূলে নৌপুলিশের টহল জোরদারের দাবি জানাই।

কোস্টগার্ড জোনাল সদর দপ্তর (দক্ষিণ জোন-ভোলা) স্টাফ অফিসার (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট খন্দকার শাফকাত হোসেন  বলেন, সম্প্রতি সুন্দরবনের দক্ষিণে সমুদ্রে ফিশিং বোট জলদস্যুদের হামলার শিকার হয়েছে বলে শুনেছি। জলদস্যু দমনে গভীর সমুদ্রে নিয়মিত কোস্টগার্ডের জাহাজের টহল অব্যাহত রয়েছে। জেলেদের সতর্ক থেকে ট্রলার মালিক সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে বলা হয়ছে। যাতে জেলেরা দ্রুত তথ্য দিতে পারেন। তা হলেই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারব।






উত্তর দিন

Your email address will not be published. Required fields are marked as *

*